ব্যাট হাতে স্কোরটা তত সমৃদ্ধ ছিল না। তবে বল হাতে বাংলাদেশকে দেখা গেল দুর্দান্তরূপে। প্রথমে কাজটা করলেন স্পিনাররা। পরে যোগ দিলেন পেসাররাও। সব মিলিয়ে নয়নকাড়া বোলিংয়ে শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়াকে এক ঝটকায় মাটিতে নামাল টাইগাররা। আর এর মাধ্যমে অজিদের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ পেল প্রথম জয়।
মঙ্গলবার মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে ২৩ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। পাঁচ ম্যাচ সিরিজে ১-০তে এগিয়ে মাহমুদউল্লাহ শিবির।
আগে ব্যাট করতে নেমে ৭ উইকেটে ১৩১ রান করে বাংলাদেশ। জবাবে ১০৮ রান করতে পারে অস্ট্রেলিয়া।
সহজ লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই বিপদে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। স্পিন ঘূর্ণিতে নাকাল সফরকারী শিবির। টানা তিন ওভারে ৩ উইকেট হারায় দলটি, ১১ রানে। ইনিংসের প্রথম বলে মেহেদীর দারুণ বোলিংয়ে সরাসরি বোল্ড হয়ে ফিরে যান আলেক্স কেরি। পান গোল্ডেন ডাকের স্বাদ।
দ্বিতীয় ওভারে আরেকটি উইকেট। এবার স্পিনার নাসুম আহমেদ। এগিয়ে হাকাতে গিয়ে বল-ব্যাটে সংযোগ ঘটাতে পারেননি জশ ফিলিপ। পেছন থেকে দ্রুত স্টাম্প ভেঙে দেন উইকেট কিপার সোহান। ১০ রানে নেই দুই উইকেট। ৫ বলে ৯ রান করে ফেরেন ফিলিপ।
তৃতীয় ওভারে প্রথম বল করতে এসেই উইকেটের দেখা পান সাকিব আল হাসান। নিজের প্রথম বলেই বোল্ড করেন হেনরিকসকে। যদিও আউটটি হেনরিকসের জন্য দুর্ভাগ্যজনক। সুইপ করেছিলেন, কিন্তু বল দুই পায়ের ফাক দিয়ে গড়িয়ে ভেঙে দেয় পেছনের স্টাম্প। ১১ রানে অস্ট্রেলিয়া হারায় তিন উইকেট।
দলের এমন বিপদ মুহূর্তে হাল ধরার চেষ্টা করেন অধিনায়ক ওয়েড ও অভিজ্ঞ মিচেল মার্শ। যদিও বেশিদূর যেতে পারেননি অজি অধিনায়ক। মোস্তাফিজের দারুণ ক্যাচিংয়ে ভাঙে এই জুটি। নাসুমের বলে দলীয় ৪৯ রানে ধুকতে থাকা ওয়েডের ক্যাচ দারুণভাবে লুফে নেন মোস্তাফিজ। ২৩ বল খেলেও থিতু হতে পারেননি তিনি। করেন মাত্র ১৩ রান।
এরপর সময় যত গড়িয়েছে বাংলাদেশের বোলিংয়ের ধার যেন আরো বেড়েছে। স্পিনের সঙ্গে আক্রমণে আলো ছড়ান দুই পেসার মোস্তাফিজুর রহমান ও শরিফুল ইসলাম।
দলীয় ৭১ রানে অ্যাস্টন অ্যাগার হিট উইকেটে আউট হন সাত রান করে। এর কিছুক্ষণ পর ভয়ংকর মিচেল মার্শকে বিদায় করে বাংলাদেশ শিবিরে স্বস্তি এনে দেন স্পিনার নাসুম আহমেদ। অনেক উঁচুতে উঠা বল বেশ ধৈযসহকারে তালুবন্দী করেন শরিফুল ইসলাম। ৪৫ বলে চারটি চার ও এক ছক্কায় ৪৫ রান করে ফেরেন মার্শ।
এরপর অস্ট্রেলিয়ার বলতে গেলে কেউ মাথা তুলে দাড়াতে পারেনি। অ্যাস্টন টার্নারকে (৮) মাহমুদউল্লাহর ক্যাচ বানান মোস্তাফিজ। অ্যান্ড্রি টাই ও অ্যাডাম জাম্পাকে শূন্য উপহার দেন বাংলাদেশের তরুণ পেসার শরিফুল ইসলাম। ১০৪ রানে নেই ৯ উইকেট। জয়ের খুব কাছাকাছি তখন বাংলাদেশ। শেষটাতে আর কোন চমক দেখাতে পারেনি সফরকারীরা। শেষটা রাঙান মোস্তাফিজ। ইনিংসের শেষ বলে স্টার্ককে বোল্ড করে উৎসবে মাতান সবাইকে। বাঙলাদেশ পায় অনির্বচনীয় এক জয়ের স্বাদ।
বল হাতে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন নাসুম আহমেদ। শরিফুল ও মোস্তাফিজ দুটি, মেহেদী, সাকিব নেন একটি করে উইকেট।
Post a Comment