৫ আগস্টের ন্যায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায়ও সারাদেশে ২৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে করোনায় দেশে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৩ হাজার ১৬১ জনে। এ সময়ে নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ১১ হাজার ১৬৪ জন। এ নিয়ে দেশে মোট শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৩ লাখ ৭৬ হাজার ৩২২ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ২৩ দশমিক ৫৪ শতাংশ। মোট পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৭৬ শতাংশ। মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৬৮ শতাংশ।

আজ মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে পাঠানো করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। এর আগে সোমবার ২৪৫, রোববার ২৪১, শনিবার ২৬১, শুক্রবার ২৪৮, বৃহস্পতিবার ২৬৪ (সর্বোচ্চ), বুধবার ২৪১ জনের মৃত্যু হয়। গত ৭ জুলাই প্রথমবারের মতো দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা ২০০ ছাড়ায়। এ দিন মৃত্যু হয় ২০১ জনের। এরপর থেকে প্রায় প্রতিদিনই করোনায় দুই শতাধিক মানুষের মৃত্যু হচ্ছে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ১৪ হাজার ৯০৩ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ১২ লাখ ৩৪ হাজার ৭৬২ জন। দেশের ৭০৮টি ল্যাবের অধীনে গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ৪৮ হাজার ৪১৬ জনের। পরীক্ষা করা হয়েছে ৪৭ হাজার ৪২৪টি। নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ২৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ। দেশে এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৮২ লাখ ১২ হাজার ৪১টি। বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের আছেন ৯২ জন। এছাড়া চট্টগ্রামে ৬০, রাজশাহীতে ২৫, খুলনায় ২৭, বরিশালে ১১, সিলেটে ১৭, রংপুরে ১৪ এবং ময়মনসিংহে ১৮ জন মারা গেছেন।

নারী ও পুরুষের হিসাবে দেখা গেছে, ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের মধ্যে ১৫৪ জন পুরুষ এবং ১১০ জন নারী। এদের মধ্যে ১০ জন বাসায় মারা গেছেন। বাকিরা হাসপাতালে মারা গেছেন। মোট মারা যাওয়াদের মধ্যে পুরুষ ১৫ হাজার ৩৮৪ জন এবং নারী ৭ হাজার ৭৭৭ জন। বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের মধ্যে ৯১ থেকে ১০০ বছরের মধ্যে ৫, ৮১ থেকে ৯০ বছরের ১২, ৭১ থেকে ৮০ বছরের ৪৮, ৬১ থেকে ৭০ বছরের ৮৫, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ৬৬, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ২৫, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ১৬, ২১ থেকে ৩০ বছরের ৬, ১০ বছরের নিচের একজন মারা গেছেন।

গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম ৩ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ দেশে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। করোনার ভারতীয় ডেলটা ধরনের দাপটে দৈনিক সংক্রমণ ও মৃত্যু কয়েক গুণ বেড়েছে। গত জুলাই মাসে দেশে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৬ হাজার ১৮২ জনের। প্রায় দেড় বছর ধরে চলা এই মহামারিতে এর আগে কোনো মাসে এত মৃত্যু দেখেনি বাংলাদেশ। এর আগে বেশি মৃত্যু হয়েছিল গত এপ্রিলে ২ হাজার ৪০৪ জনের।

সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকারি নির্দেশে গত মাসের প্রথম দুই সপ্তাহ দেশে সর্বাত্মক বিধিনিষেধ পালন করা হয়। এ সময় সব ধরনের অফিসের পাশাপাশি গণপরিবহন চলাচলও বন্ধ রাখা হয়। কিন্তু ২১ জুলাই ঈদুল আজহা উপলক্ষে এই বিধিনিষেধ আট দিনের জন্য শিথিল করা হয়। ঈদের পর ২৩ জুলাই থেকে আবার সর্বাত্মক বিধিনিষেধ চালু করা হয়, যা আজ শেষ হচ্ছে। আগামীকাল থেকে অফিস, ব্যাংক, রেস্তোরাঁ, দোকানপাট ও গণপরিবহনসহ প্রায় সব কিছু খুলে দেওয়া হচ্ছে। মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে এতদিন বাস–ট্রেন–লঞ্চে অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে যাত্রী পরিবহন করতে দেওয়া হয়েছিল। তবে এবার আর সেই বিধিনিষেধ থাকছে না।


Post a Comment

أحدث أقدم